কক্সবাজারের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত একটি সুবিশাল সমুদ্রবীক্ষণ হোটেল
ভূমিকা
বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ পর্যটন গন্তব্য কক্সবাজার। এখানকার অফুরান প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, বালুকাবেলা, এবং সমুদ্রের অকূল দৃশ্য পর্যটকদের মুগ্ধ করে। সমুদ্রের কোল ঘেঁষে গড়ে উঠা অসংখ্য হোটেলের মধ্যে হোটেল কোরাল বীচ একটি অন্যতম নাম। সমুদ্রের সরাসরি ভিউ, আধুনিক সুযোগ-সুবিধা, এবং স্বাচ্ছন্দ্যময় অবস্থানের জন্য এই হোটেলটি পছন্দের তালিকায় থাকে অনেকের। এই আর্টিকেলে হোটেল কোরাল বীচের বিস্তারিত তথ্য, বুকিং পদ্ধতি, রুমের ধরণ, ভাড়া, সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে আলোচনা করা হবে।
হোটেল কোরাল বীচ: সংক্ষিপ্ত পরিচয়

Picture Credit: Trip
- অবস্থান: কলাতলী মেইন রোড, কক্সবাজার।
- সমুদ্র থেকে দূরত্ব: সরাসরি সমুদ্রসংলগ্ন (বিছানকাঠি সমুদ্র সৈকত)।
- প্রতিষ্ঠা সাল: ২০১৫।
- স্টার ক্যাটাগরি: ৩-স্টার।
হোটেলটি শহরের মূল আকর্ষণ থেকে মাত্র ১০-১৫ মিনিটের দূরত্বে অবস্থিত, যা পর্যটকদের জন্য সুবিধাজনক। রাস্তার পাশে হওয়ায় যানজট এড়াতে সকাল-সন্ধ্যা হেঁটেও ঘুরে আসা যায় নিকটবর্তী বাজার বা দর্শনীয় স্থানে।
রুমের ধরণ ও ভাড়া

Picture Credit: Booking
হোটেল কোরাল বীচে বিভিন্ন বাজেট ও চাহিদা অনুযায়ী রুমের ব্যবস্থা রয়েছে।
রুম টাইপ | সুবিধা | ভাড়া (প্রতিরাত) |
স্ট্যান্ডার্ড রুম | এসি, ফ্রি Wi-Fi, টিভি, অ্যাটাচড বাথরুম | ৳৩,৫০০ – ৳৪,৫০০ (অফ-সিজন) |
ডিলাক্স সি-ভিউ | সমুদ্রের সরাসরি ভিউ, বালকনি | ৳৫,০০০ – ৳৬,৫০০ (পিক সিজন) |
সুইট রুম | লিভিং এরিয়া, মিনি কিচেনেট, অতিথি সেবা | ৳৮,০০০ – ৳১২,০০০ (ইভেন্ট সিজন) |
ভাড়ার তারতম্যের কারণ:
- পিক সিজন (নভেম্বর – ফেব্রুয়ারি): ভাড়া সর্বোচ্চ।
- অফ-সিজন (জুন – সেপ্টেম্বর): ভাড়া ২০-৩০% কম।
- বিশেষ অফার: হানিমুন, গ্রুপ বুকিং, বা দীর্ঘস্থায়ী থাকার জন্য ডিসকাউন্ট।
বুকিং পদ্ধতি

Picture Credit: Traveloka
১. অনলাইন বুকিং: হোটেলের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট www.hotelcoralbeach.com বা প্লাটফর্ম যেমন Booking.com, Airbnb থেকে সরাসরি বুকিং করুন।
২. ফোন কল: +৮৮০১৮১৮০৮০৬৫১ (২৪/৭ সার্ভিস)।
৩. ইমেইল: reservation@hotelcoralbeach.com এ অনুরোধ পাঠান।
প্রিপেমেন্ট নীতি:
- অ্যাডভান্সে ৩০% পেমেন্ট বাধ্যতামূলক।
- ক্যাশ/কার্ড/মোবাইল ব্যাংকিং মাধ্যমে পেমেন্ট করা যায়।
সুবিধা ও সেবা

Picture Credit: Jaigo Hotels
- অভ্যন্তরীণ সুবিধা:
- ২৪/৭ রুম সার্ভিস।
- সমুদ্রমুখী রেস্টুরেন্ট (বাংলাদেশি, চাইনিজ, ও কন্টিনেন্টাল খাবার)।
- সুইমিং পুল ও শিশুদের জন্য প্লে জোন।
- ফ্রি পার্কিং এবং জেনারেটর ব্যবস্থা।
- অ্যাড-অন সার্ভিস:
- ট্যুর গাইড বুকিং।
- বিচে ক্যাম্প ফায়ার অ্যরেঞ্জমেন্ট।
- লন্ড্রি ও ড্রাই ক্লিনিং।
সুবিধা vs অসুবিধা
সুবিধা | অসুবিধা |
প্রাইভেট বিচ এক্সেস | পিক সিজনে ভিড় বেশি হয় |
পরিবারবান্ধব পরিবেশ | রেস্টুরেন্টের দাম তুলনামূলক বেশি |
কেন্দ্রীয় অবস্থান | কিছু রুমে পুরানো ফার্নিচার |
কখন যাবেন?

Picture Credit: Hunting World Beauty
- শীতকাল (নভেম্বর – ফেব্রুয়ারি): আবহাওয়া মনোরম, সমুদ্র শান্ত।
- বর্ষা এড়িয়ে চলুন (জুন – আগস্ট): ভারী বৃষ্টিতে বিচ ভিজিট বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
নিকটবর্তী দর্শনীয় স্থান
১. হিমছড়ি: ৩০ মিনিটের ড্রাইভ।
২. ইনানি বিচ: ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিট।
৩. কক্সবাজার ফিশারিজ ঘাট: ১০ মিনিটের দূরত্ব।
টিপস এন্ড ট্রিকস
- সমুদ্রের ভিউ পেতে ডিলাক্স সি-ভিউ রুম বুক করুন।
- ওয়াকিং ডিসট্যান্সে থাকা কলাতলী মার্কেট থেকে স্যুভেনির কিনুন।
- হোটেলের স্পেশাল সিফুড ডিনার ট্রাই করুন।
সমাপ্তি
হোটেল কোরাল বীচ কক্সবাজারে একটি ভার্চুয়াল প্যারাডাইজ। পরিবার, বন্ধু বা একাকী ভ্রমণ—সব ক্ষেত্রেই এখানকার সার্ভিস ও লোশন আপনাকে নিশ্চিন্ত থাকার নিশ্চয়তা দেবে। বুকিংয়ের আগে হোটেলের ওয়েবসাইট বা ক্রেতা রিভিউ চেক করে নিন, আর উপভোগ করুন সমুদ্রের গর্জনের সাথে কাটানো এক অবিস্মরণীয় সময়।
ভ্রমণ সহজ হোক, স্মৃতি অমলিন থাকুক! 🌊
লেখক: ট্রাভেল গাইড বাংলাদেশ
যোগাযোগ: contact@travelguidebd.com